পাত সঞ্চালন তত্ত্ব(Plate tectonic theory)


বিংশ শতাব্দীর প্রথমার্ধ পর্যন্ত মহাদেশ ও মহাসাগরগুলির স্থায়িত্ব পর্বতমালার গঠন, সমুদ্রবক্ষের বিস্তৃতি,অগ্ন্যুৎপাত প্রভৃতির মতো ভূতাত্ত্বিক ঘটনাবলির আংশিক ব্যাখ্যা বেকন,ওয়েগনার প্রমুখ ভূবিজ্ঞানীদের গবেষণাপত্র থেকে পাওয়া গেলেও,এই তথ্যগুলি সম্পূর্ণ সন্তোষজনক ব্যাখ্যা দিতে পারেনি।

পৃথিবীব্যাপী ভূত্বকীয় ও পাতের চলন,সংঘর্ষ,চ্যুতি, ভূমিকম্প,অগ্নুৎপাত,মহাদেশ-মহাসাগর বন্টন,পর্বত শৈলাশিরা সৃষ্টি ইত্যাদি পাত সংক্রান্ত আলোচনাকে একত্রে পাত ভূগাঠনিক তত্ত্ব বলে।

প্রবক্তাগণ~

তত্ত্বটি কোন একক তত্ত্ব নয়,বিভিন্ন ধারণাকে একসূত্রে গেঁথে তত্ত্বটি তৈরি,এটি জেফ্রির তাপীয় সংকোচন তত্ত্ব,ড্যালির মহাদেশ বিচলন তত্ত্ব,হোমসের পরিচলন স্রোত তত্ত্ব,ওয়েগনারের মহাদেশ সঞ্চালন তত্ত্ব এবং সমুদ্রবক্ষের বিস্তৃতি তত্ত্বের ওপর প্রতিষ্ঠিত।১৯৬৫ সালে কানাডীয় ভূ-পদার্থবিদ জে তুজো উইলসন সর্বপ্রথম নেচার পত্রিকায় পাত ও পাত ভূগঠনিক শব্দ ব্যবহার করেন।
এরপরে,
ম্যাকেঞ্জি,পার্কার,আইজকস,সাইকস,মরগ্যান, অলিভার প্রমুখ ভূবিজ্ঞানী এই তত্ত্বকে সমৃদ্ধ করেন।
১৯৬৮ সালে ফরাসি বিজ্ঞানী জেভিয়ার লা পিঁচো ভূগঠন তত্ত্বকে পরিপূর্ণতা দান করেন।পিঁচোকে পাত ভূগঠণ তত্ত্বের জনক বলা হয়।

পাতের সংজ্ঞা ও বৈশিষ্ট্য(Defination and characteristics):
সংজ্ঞা~
সিয়াল ও সীমায় গঠিত পৃথিবীর অশ্মমন্ডলীয় স্তর ছোট-বড় কতগুলি পাতলা,অনমনীয় ও কঠিন চলমান খন্ডে বিভক্ত।
যাদেরকে সাধারণভাবে প্লেট বা পাত বলে।
পৃথিবীব্যাপী ভূত্বকীয় পাতের আপেক্ষিক চলন, বিরুপণ,বিবর্তন এবং ফলাফল হিসাবে মহাদেশগুলির ভৌগোলিক অবস্থানের পরিবর্তন ও সমুদ্রবক্ষের আকার-আকৃতির পরিবর্তন ও পাত সীমানায় ভূগাঠনিক ক্রিয়াকে একত্রে পাত সংস্থান বলে।
বৈশিষ্ট্য~
১. ভূত্বকীয় অংশ:
পাতগুলি মহাদেশীয় ও মহাসাগরীয় এই দুই ভাগে বিভক্ত।
২.বেধ:
পাতগুলির গভীরতা সমান নয়।মহাসাগরীয় পাতের গড় গভীরতা প্রায় 70 কিমি।কিন্তু মহাদেশীয় পাতের গড় গভীরতা প্রায় 150 কিমি।
৩.আয়তন:
পাতসমূহের বিস্তার বা আয়তন প্রায় 1 লক্ষ বর্গ কিমি থেকে প্রায় 100 কোটি বর্গকিমি পর্যন্ত হতে পারে,
এজন্য পাত গুলি বড়-মাঝারি-ছোট হয়।
৪.বিস্তার:
পাতগুলি মহাদেশ ও সমুদ্রের উভয়ের অংশ,
অথবা শুধু মহাদেশ বা শুধু মহাসাগর নিয়ে গঠিত।
৫.গতিবেগ:
পাতগুলি স্থির নয়।সর্বদা সঞ্চরণশীল।ভিন্ন ভিন্ন গতিবেগে পাতগুলি পরস্পরের দিকে বা বিপরীতে অগ্রসর হয়।
৬.প্রান্তভাগের প্রকৃতি:
চলমান পাতের দুটি সীমানা থাকে।

মূল বক্তব্য~
ভূত্বক চ্যুতিরেখা দ্বারা বিচ্ছিন্ন এবং ক্ষুব্ধমন্ডলের উপর ভাসমান 7 টি বড়,8 টি মাঝারি,ও 20 টি ছোট পাতের সমন্বয়ে গঠিত।
7 টি বৃহৎ পাত হলো-
প্রশান্ত মহাসাগরীয় পাত,আফ্রিকা পাত,ইউরোশীয় পাত,ইন্দো অস্ট্রেলিয় পাত,উত্তর আমেরিকা পাত দক্ষিণ আমেরিকা পাত, অ্যান্টার্কটিকা পাত।
8 টি মাঝারি পাত হলো-
নাজকা পাত,আরবীয় পাত,কোকো পাত,ভারতীয় পাত,ফিলিপিন্স পাত,স্কোশিয়া পাত,ক্যারিবিয়ান পাত,জুয়ান দ্যা ফুকো পাত।
20 টি ক্ষুদ্র পাত হলো-
মাদাগাস্কার পাত,সোমালি পাত,দক্ষিণ স্যান্ডউইচ পাত,পানামা পাত,অ্যাড্রীয়াটিক পাত,আনাতোলিয়া পাত,বার্মা পাত,ইরানীয় পাত, ওকিগাওয়া পাত,ইয়াংসি পাত,শ্রীলঙ্কা পাত,টোঙ্গা পাত,গ্রীনল্যান্ড পাত,গ্যালাপাগোস পাত।

(খ)পাতের চলন,পাত সীমানা,ও ভূগাঠনিক বৈশিষ্ট্য:
ম্যাগমার পরিচলন স্রোত,পাতের নিমজ্জনজনিত টান,অভিকর্ষজ টান,ম্যাগমার উত্থানের কারণে পাতগুলির তিন ধরনের চলন ও পাতসীমানা গঠিত হয়।
যথা-
প্রতিসারী,অভিসারী,নিরপেক্ষ সীমানা এই সীমানাতে নানা ভূমিরূপ গড়ে ওঠে ও ভূমিকম্প হয়।
(অ)প্রতিসারী বা অপসারী চলন(DIVERGENT MOVEMENT):
যে সীমানা বরাবর ম্যাগমার ঊর্ধ্বমুখী স্রোতের প্রভাবে দুটি পাত বিপরীত দিকে পরস্পর থেকে দূরে সরে যায় তাকে প্রতিসারী পাত সীমানা বলে। ম্যাগমা নির্গত হয়ে নতুন ভূত্বক গঠিত হয়।তাই এই পাত সীমানাকে গঠনকারী পাত সীমানাও বলে।
ভূ গাঠনিক বৈশিষ্ট্য:
১.মধ্য সামুদ্রিক শৈলশিরা~
সমুদ্র তলদেশে প্রতিসারী পাত সীমানা বরাবর দুটি পাত বিপরীত দিকে সরে গেলে মাঝের ফাটলের মধ্য দিয়ে অ্যাস্থেনোস্ফিয়ারের ব্যাসল্ট জাতীয় ম্যাগমা নির্গত ও সঞ্চিত হয়ে নতুন কঠিন সামুদ্রিক ভূত্বক ও জলে নিমজ্জিত মধ্য সামুদ্রিক শৈলশিরা সৃষ্টি হয়।
সমুদ্রবক্ষের বিস্তৃতি ঘটে।যেমন ~ ইংরেজি অক্ষর
'S' আকৃতির মধ্য আটলান্টিক শৈলশিরা বিশ্বে দীর্ঘতম।মহাসাগর তলদেশে সামুদ্রিক শৈলশিরার মোট দৈর্ঘ্য প্রায় 64,000 কিমি,
প্রস্থ~2000-2400 কিমি,
উচ্চতা-3700 মিটার পর্যন্ত হয়।
2.স্রংস উপত্যকা~
দুটি পাত বিপরীত দিকে সরে গেলে দুদিক থেকে শিলায় টান পড়ে, ভূত্বক নিচের দিকে বসে গিয়ে রৈখিকভাবে সংকীর্ণ চ্যুতি,স্রংস উপত্যকা ও হ্রদ সৃষ্টি হয়।
যেমন~আফ্রিকার পূর্ব প্রান্তে উত্তর-দক্ষিণে বিস্তৃত বৃহত পূর্ব আফ্রিকা গ্রস্ত উপত্যকা এবং ভিক্টোরিয়া, টাঙ্গানায়িকা,নিয়াসা,কিডু,এডওয়ার্ড হ্রদ অঞ্চল,
মধ্য আটলান্টিক শৈলশিরায় আইসল্যান্ডের গ্রস্ত উপত্যকা।
৩.সাগর ও মহাসাগর~
দুটি মহাদেশীয় পাত ক্রমশ পরস্পর থেকে দূরে সরে গিয়ে মধ্যবর্তী অঞ্চলে সামুদ্রিক ভুত্বক উন্মুক্ত হয়ে মহাসাগর-সাগর সৃষ্টি হয়।
যেমন-প্যানজিয়া,
ভূত্বক ভেঙ্গে উত্তর ও দক্ষিণ আমেরিকা পাত পশ্চিম দিকে সরে আটলান্টিক মহাসাগর, ইন্দো-অস্ট্রেলীয় পাত উত্তর পূর্ব দিকে সরে ভারত মহাসাগর,আরবীয় পাত উত্তর দিকে সরে লোহিত সাগর ও এডেন উপসাগর সৃষ্টি হয়েছে।
৪.ভূমিকম্প~
প্রতিসারী পাত সীমানায় পাতের চলন,চ্যুতি,ও অগ্ন্যুৎপাতের ফলে অগভীর উৎসের মৃদু ভূমিকম্প ঘটে।
(আ)অভিসারী চলন(Convergent movement):
যে সীমানায় ম্যাগমার নিম্নগামী স্রোতের প্রভাবে দুটি পাত পরস্পরের দিকে চালিত হয়ে পরস্পর সংঘর্ষ লিপ্ত হয়,তাকে অভিসারী পাত সীমানা বলে।
এর ফলে তিন ধরনের সংঘর্ষ ক্ষেত্র গড়ে ওঠে ও পাতের অবলুপ্তি ঘটে তাই এই পাত সীমানাকে বিনাশকারী পাত সীমানাও বলে।
(ক)মহাসাগরীয় মহাসাগরীয় পাতের সংঘর্ষ:~
দুটি মহাসাগরীয় পাতের মধ্য ভারী পাতটি হালকা পাতের নিচে প্রবেশ করে।
ভূগাঠনিক বৈশিষ্ট্য:~
১.দ্বীপপুঞ্জ:
নিম্নগামী ভারী পাতটি হালকা-পাতের নিচে প্রবেশ করে প্রচন্ড উত্তাপে গলিত শিলা ম্যাগমারূপে সমুদ্রগর্ভে সঞ্চিত হয়ে আগ্নেয় দ্বীপমালা রূপে সমুদ্রপৃষ্ঠে উন্মুক্ত হয়।
আটলান্টিক পাতের নিচে প্রশান্ত মহাসাগরীয় পাতের প্রবেশের ফলে ক্যারিবিয়ান দ্বীপীয় বৃত্তচাপ,ভারত মহাসাগরীয় পাতের নিচে প্রশান্ত মহাসাগরীয় পাতের প্রবেশের ফলে ইন্দোনেশীয় দ্বীপীয় বৃত্তচাপ সৃষ্টি হয়েছে।
২.সামুদ্রিক খাত:
দুটি মহাসাগরীয় পাতের মুখোমুখি সংঘর্ষের ফলে উভয় পাতের সীমান্তে শিলামন্ডল অতি গভীর অবতল বাঁক সৃষ্টি হয়ে 'back arc besin' বা সমুদ্রখাত গড়ে ওঠে।
যেখানে মিশ্র পদার্থের সঞ্চয় তথা মেলাঙ্গে থাকে।
যথা~
জাপান সাগরে মারিয়ানা,
ভারত সাগরে সুন্দা খাত।
৩.ভূমিকম্প:
দুটি মহাসাগরীয় পাতের সংঘর্ষের ফলে সমুদ্র খাত বরাবর ঘনঘন গভীর উৎসের প্রবল ভূমিকম্প হয়।
৪.আগ্নেয়গিরি:
সংঘর্ষ তল বরাবর প্রবল চাপে ও তাপে পাত গলে গিয়ে বা ভূগর্ভস্থ ম্যাগমা বের হয়ে আগ্নেয়গিরি গড়ে ওঠে।
(খ) মহাদেশীয়-মহাদেশীয় সংঘর্ষ:
দুটি মহাদেশীয় পাত পরস্পরের দিকে চলনের ফলে ভারী পাতটি হালকা পাতের নিচে ঢুকে যায়।
ভূ-গাঠনিক বৈশিষ্ট্য:
১.ইমব্রিকেট চ্যুতি:
দুটি মহাদেশীয় পাতের সংঘর্ষ হলে প্রথমে মহাসাগরীয় ভূত্বক বেঁকে চ্যুতি সৃষ্টি হয় ও ভুত্বক খন্ড খন্ড হয়ে একে অপরের উপর উঠে যায় একে ইমব্রিকেট চ্যুতি বলে।
২.ভঙ্গিল পর্বত:
দুটি মহাদেশীয় পাতের সংঘর্ষে হলে মধ্যবর্তী অগভীর সমুদ্রে(জিওসিনক্লাইন)সঞ্চিত মহাদেশীয় অবক্ষেপ প্রবল পার্শ্ব চাপে ভাঁজপ্রাপ্ত ও উঁচু হয়ে ভঙ্গিল পর্বতরূপে জলতলের ওপর জেগে ওঠে অবশেষে পাত দুটি পরস্পরের খুব কাছে চলে এলে একটি রেখা বরাবর মুক্ত হয়ে সিবন সৃষ্টি হয়।
মহিখাতটি অবলুপ্ত হয়ে ফ্লিশ ও মোলাশ সঞ্চয় ঘটে।
যেমন-
দ্রুত গতিশীল(১৬ সেমি\বছর)ভারতীয় পাত উত্তর পূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে তিব্বতীয় পাতের নিচে নিমজ্জিত হওয়ায় মধ্যবর্তী অংশে হিমালয় পর্বতমালা সৃষ্টি হয়েছে।
৩.সুউচ্চ মালভূমি:
সংঘর্ষ স্থলে মহাদেশীয় ভূত্বক প্রবল পার্শ্বচাপে উঁচু হয়ে সুউচ্চ পর্বত বেষ্টিত মালভূমি গঠিত হয়।
যেমন-
তিব্বত মালভূমি।
(গ)মহাদেশীয়-মহাসাগরীয় পাতের সংঘর্ষ:
একটি মহাদেশীয় পাতের সঙ্গে একটি মহাসাগরীয় পাতের সংঘর্ষের ফলে দুটি ঘটনা ঘটে।
A.নিমজ্জন
B.বিপরীত নিমজ্জন।
A.নিমজ্জন বা SUBDUCTION:
ভারী হওয়ায় মহাসাগরীয় পাত একটি হেলানো তল(বেনিঅফ জোন) বরাবর হালকা মহাদেশীয় পাতের নীচে ক্ষুব্দমণ্ডলের মধ্যে প্রবেশ করে অন্তর্হিত হয়।
এই প্রক্রিয়াকে নিমজ্জন বলে।
B.বিপরীত নিমজ্জন:
অনেক ক্ষেত্রে হালকা মহাদেশীয় পাতটি সক্রিয় হয়ে ভারী মহাসাগরীয় পাতের ওপরে উঠে আসে।এই ব্যতিক্রমী প্রক্রিয়াকে বিপরীত নিমজ্জন বলে।
পাপুয়া নিউগিনিতে দেখা যায়।
ভূ-গাঠনিক বৈশিষ্ট্য:
১.আগ্নেয়গিরি:
অভিসারী পাত সীমান্তে মহাদেশীয় পাতের নিচে ঢুকে যাওয়া মহাসাগরীয় পাতটি প্রবল ঘর্ষণ ও চাপের কারণে উদ্ভূত তাপ ও ভূ-অভ্যন্তরের তাপে গলে অ্যান্ডেসাইট জাতীয় ম্যাগমায় পরিণত হয়।
পাত সীমানার দুর্বল সংযোগস্থল বা কোন ফাটল বরাবর ওই ম্যাগমা ভূপৃষ্ঠে নির্গত হয়ে বৃত্তচাপের আকারে অসংখ্য আগ্নেয়গিরি সৃষ্টি হয়।
যেমন~
প্রশান্ত মহাসাগরীয় পাতের সীমানায় প্রশান্ত মহাসাগরীয় আগ্নেয় মেঘলা বিশ্বের 80% আগ্নেয়গিরি অবস্থিত।
২.আগ্নেয় দ্বীপ:
বেনিওফ জোনে অগভীর সমুদ্র তলদেশের আগ্নেয়গিরিগুলি জলতলের ওপর মাথা উঁচু করে পাত সীমানার সমান্তরালে বৃত্তচাপের আকারে আগ্নেয়দ্বীপ গঠিত হয়।
যেমন~প্রশান্ত মহাসাগরের মারিয়ানা,
হাওয়াই,আলাস্কার অ্যালিউশিয়ান দ্বীপপুঞ্জ।
৩.ভঙ্গিল পর্বত শৃংখল:
অভিসারী পাত সীমান্তে মহাদেশীয় পাতের নিচে মহাসাগরীয় পাত অনুপ্রবেশের সময় পাত দুটি কাছাকাছি এসে প্রবল পার্শ্বচাপ সৃষ্টি করে ও সামুদ্রিক ভূত্বকে সঞ্চিত পলিরাশি ভাঁজপ্রাপ্ত হয় ও উঁচু হয়ে ভঙ্গিল পর্বতমালা বা কর্ডিলেরা* রূপে জলতলের ওপর জেগে ওঠে।
যেমন-
আমেরিকান পাত ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় পাতের সংঘর্ষের ফলে রকি ও আন্দিজ কর্ডিলেরা সৃষ্টি হয়েছে।
৪.সামুদ্রিক খাত:
মহাদেশীয় পাতের নিচে মহাসাগরীয় পাতের নিমজ্জন স্থলে মহাদেশীয় পাত সীমানা প্রবলচাপে ধনুকের মত নিচের দিকে বাঁক নিয়ে অসংখ্য ফাটল ও সামুদ্রিক খাত গড়ে ওঠে।
যথা-
দক্ষিণ আমেরিকার পশ্চিম উপকূলে পেরু চিলি খাত।
৫.ভূমিকম্প:
বেনিঅফ মন্ডলে মহাসাগরীয় পাতের ক্রমাগত অনুপ্রবেশের ফলে সুগভীর,মাঝারি গভীর ও অগভীর উৎসের ঘনঘন শক্তিশালী ভূমিকম্প হয়।
যথা-
চিলি ভূমিকম্প(১৯৬০) মাত্রা- ৯.৫১ রিখটার।
(ই)নিরপেক্ষ চলন(TRANS-CURRENT MOVEMENT):
যে সীমানা বরাবর দুটি পাত পরস্পরের সমান্তরালে বিপরীত দিকে পাশা-পাশি সঞ্চরণ করে তাকে নিরপেক্ষ পাত সীমানা বলে।ফলে পাতের গঠন বা ধ্বংস ঘটে না তাই এই পাত সীমানাকে সংরক্ষণশীল পাত সীমানাও বলে।
ভূ গাঠনিক বৈশিষ্ট্য:
১.ট্রান্সফর্ম চ্যুতি:
দুটি পাত পরস্পরের সমান্তরালে বিপরীত দিকে গতিশীল হওয়ায় পাত সীমানায় ফাটল ও আয়াম স্খলন চ্যুতি সৃষ্টি হয় একে ট্রান্সফর্ম চ্যুতি বলে।এটি 100 থেকে 150 কিমি গভীর ও কয়েক হাজার কিমি দীর্ঘ হয়।
পৃথিবীতে দুটি ট্রান্সফর্ম চ্যুতি আছে।
(অ)সান আন্দ্রিজ চ্যুতি:
ক্যালিফোর্নিয়া অঞ্চলে উত্তর আমেরিকান পাত ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় পাতের সীমানায় অবস্থিত।
এটি উত্তর-দক্ষিণে বিস্তৃত বিশ্বের দীর্ঘতম ট্রান্সফর্ম চ্যুতি।(১০০০ কিমি)
(আ)উত্তর আনাতোলিয়া চ্যুতি:
তুরস্কে ইউরেশিয়া পাত আনাতোলিয়া পাতের সীমানায় ককেশাস পর্বত হয়ে এজিয়াস সাগর পর্যন্ত পূর্ব পশ্চিমে বিস্তৃত।
২.ভূমিকম্প:
চ্যুতি রেখা বরাবর দুটি পাতের প্রবল ঘর্ষণের ফলে ঘনঘন অগভীর উৎসের ভূমিকম্প সৃষ্টি হয়।
যথা-
ক্যালিফোর্নিয়া অঞ্চলে প্রায়ই ভূমিকম্প ও সুনামী সৃষ্টি হয়।

বিশেষ দ্রষ্টব্য:
(ভূগোল শিক্ষার ইতিবৃত্ত পেজটিতে আমরা ভূগোল বিষয়ক বিভিন্ন টপিক ও কন্টেন্ট নিয়ে আলোচনা করবো,প্রতিনিয়ত ভূগোল বিষয়ভিত্তিক আপডেট পেতে পেজটি লাইক ও ফলো করুন।
এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য থাকলে আমাদের পেইজে দেওয়া নম্বরে WhatsApp করুন)

ফেসবুক পেজ-ভূগোল শিক্ষার ইতিবৃত্ত

Comments

  1. খুব উপকৃত হই আমরা সকলে। সকলকে অসংখ্য ধন্যবাদ , ভালো থাকবেন 🙏

    ReplyDelete

Post a Comment

Popular posts from this blog

⛰️ কার্ষ্ট ভূমিরূপ গঠন পক্রিয়া ও দ্রবণ কার্য 🌍

🌍চ্যুতি ও চ্যুতি দ্বারা গঠিত ভূমিরূপ🌍